বাবা-মায়েদের যে উল্লেখযোগ্য কঠিন সিদ্ধান্তটি নিতে হয় তা হল তারা সম্পূর্ণ সময় অফিসে গিয়ে কাজ করবেন নাকি স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হবেন। আপনার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, পেরেন্টিং ফিলোজফি ও উপকরণগুলি আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে যে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়া আপনার জন্যে ঠিক কি না। তবে এক্ষেত্রে অনেকগুলি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন: আপনার শিশুর বিকাশ ও প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে খেয়াল রাখার সময়ে আপনার রোজগার, আপনার অবসর সময় এবং সামাজিক পরিস্থিতিগুলি পরিবর্তন হবে।
বর্তমানে বাবা-মায়েরা যে অনেক সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন তার মধ্যে অন্যতম হল তাদের কাজের দায়িত্বগুলি ও শিশুর যত্ন নেয়ার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে না পারা। একটি উপায় হল উপকরণগুলি সহ বাড়িতে স্টে-অ্যাট-পেরেন্ট হওয়া। তবে এই সুযোগটি সকলের সাধ্যের মধ্যে পড়ে না। সিঙ্গল পেরেন্ট বা এমন বাবা-মা যারা সংসার চালানোর জন্যে সমস্ত রোজগারের ওপর নির্ভর করেন, তাদের জন্যে এটি কঠিন হতে পারে। আবার, কিছু বাবা-মায়ের কাছে এটি ভালো সুযোগ হতে পারে।
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হলে তা নানা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। কিছু বাবা-মা হয়তো সর্বদা এর স্বপ্ন দেখে থাকবেন, কিন্তু বাকিরা তাদের শিশুর প্রাথমিক দিনগুলিতে সাথ দিতে তাদের কেরিয়ারকে আটকে রাখেন। যে কারণে বা জেভাবেই আপনি স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার কথা ভাবেন না কেন, এটি একটি মুখ্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত। এর সাথে যথেষ্ট পরিমাণে সুবিধা এবং সমস্যাও থাকে।
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট কতটা প্রচলিত?
গবেষণা অনুযায়ী পাঁচজনের মধ্যে একজন স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হয়ে থাকেন। বেশিরভাগ বাবা-মায়েরাই বাড়ির বাইরে কাজ করেন, সে তাদের নিজেদের পছন্দেই হোক কিংবা তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে। সাম্প্রতিক কিছু বছরের নানা পরীক্ষায় এও দেখা গেছে যে বেশিরভাগ বাবারা বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত বেছে নিচ্ছেন। একই সময়ে স্টে-অ্যাট-হোম মায়েদের সংখ্যা একই আছে। গবেষণা অনুযায়ী বিগত কিছু বছরে স্টে-অ্যাট-হোম বাবাদের সংখ্যা 10 থেকে বেড়ে 17 শতাংশ হয়েছে।
এছাড়া, কোভিড অতিমারী বিগত কিছু বছরে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টদের সংখ্যা বদলে দিয়েছে। একটি পরীক্ষা অনুযায়ী 20 শতাংশ মায়েরা স্বেচ্ছায় কাজ ছেড়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে বা শিশুর যত্নের ব্যবস্থাপনার জন্যে, যেখানে অন্য 23 শতাংশদের কে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বা কাজের সময় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই সংখ্যাগুলি দীর্ঘমেয়াদে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টদের হারকে কীভাবে প্রভাবিত করবে তা বলা মুশকিল তবে বর্তমানের প্রভাব এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার উপকারিতাগুলি কী-কী?
সারাদিন আপনার শিশুর সাথে কাটানো ও তাদের প্রয়োজনগুলির খেয়াল রাখা আপনাকে অত্যন্ত সন্তুষ্টি প্রদান করে। শিশুরা সুস্বাস্থ্য নিয়ে বড় হলে এটি আপনাকে গর্ব অনুভব করায়। স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার কিছু-কিছু সুবিধা হল:
- আপনার একটি ফ্লেক্সিবল সময়সূচী থাকে(You have a flexible schedule): স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে যে এর ফলে আপনার একটি ফ্লেক্সিবল দিনতালিকা থাকবে। বাবা-মা হলে আপনার দৈনন্দিন জীবনে ফ্লেক্সিবল হতে পারলে তা সবকিছুকে সহজ করে দেয়। তবে এমন কিছু সময় থাকবে যখন আপনার শিশুর ভালো লাগবে না বা আপনার দিন কঠিন যাবে, এবং আপনাকে কিছু পরিকল্পনা বদলাতে হবে। সমস্যাগুলির সাথে যুঝে নিয়ে ওই মুহূর্তের জন্যে যেটি সবচেয়ে ভালো সেটি করাই উচিত। এছাড়া যখন আপনি বাড়িতে শিশুর সাথে থাকেন তখন ডাক্তারের অ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়া এবং পরিকল্পনা করা খুব সহজ হয়ে যায়। আবার আপনার সঙ্গীর কাজের সাথে সময় মিলিয়ে কখন আপনার শিশুকে ডাক্তার দেখাতে যেতে পারবেন সেইসব সমস্যাও থাকবে না।
- আপনি কোনো মাইলস্টোন মিস করবেন না (You won't miss any milestones): আপনার শিশুর বৃদ্ধির একটি মাইলস্টোনও আপনি মিস করবেন না; স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার সবচেয়ে ভালো বিষয় হল এটি। আপনার শিশু যখন প্রথম হাসি হাসবে, প্রথম শব্দ বলবে বা প্রথম ধাপ চলবে তখন আপনি সেখানে উপস্থিত থাকবেন। তাদের জীবনের প্রথম বছর থেকে একটিও বিবরণ বাদ না দিয়ে তাদের বেড়ে ওঠা দেখতে পাওয়া একটি অসাধারণ বিষয়।
- আপনার শিশু সম্পূর্ণ নজরদারি পায় (Your child gets undivided attention): আপনার শিশু প্রতিদিন আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ পাবে, এমনকি তখনও যখন আপনি বাড়িতে অন্য কোনো কাজ করছেন বা আপনার নিজের জন্যে সময় নিচ্ছেন। আপনার শিশুর আপনাকে প্রয়োজন হলে যে-কোনো মুহূর্তে আপনি যা করছিলেন তা বন্ধ করে দিতে পারবেন। বলাই বাহুল্য যে আপনার শিশুর যত্নের জন্যে যে ভালোবাসা আপনি দেবেন তা কোনো ডেকেয়ার বা ন্যানির দ্বারা সম্ভবই না। আপনি শিশুর সাথে সম্পর্ক গঠন করারও বহু সুযোগ পাবেন।
- এটি সাধ্যের মধ্যে হতে পারে (It can be more affordable): বাজেট নিয়ে বসলে আপনি হয়তো দেখবেন যে বাড়িতে আপনার শিশুর সাথে থেকে একজনের রোজগারে নির্ভর করা, সম্পূর্ণ সময় কাজ করে একটি ডেকেয়ার বা ন্যানির পিছনে খরচ করার থেকে অনেক বেশি সাধ্যের মধ্যে ও কম খরচসাপেক্ষ। বাড়িতে থেকে এবং ডেকেয়ারের পিছনে খরচা না করে আপনি আরো অনেক কিছুতে টাকা বাঁচাতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ যখন আপনাকে প্রতিদিন কাজে যেতে হবে না, আপনি গ্যাস বাঁচাতে পারবেন, এবং যদি আপনি কাজের সময়ে বাইরে খেয়ে থাকেন তবে বাড়িতে খেয়ে আরো বেশি টাকা সাশ্রয় করতে পারবেন।
- আপনার কোনো দুশ্চিন্তা থাকবে না (You will be stress-free): আপনাকে অত্যন্ত চাপযুক্ত কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না যদি আপনি স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হন। তবে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হিসাবে প্রতিটা দিনই পার্কে ঘুরে বেরানোর মতো হবে না। এমন দিন যাবে যখন আপনি ঘুমাতে পারবেন না বা আপনাকে শিশুর ঝামেলা সহ্য করতে হবে। তবুও, ভালো দিনগুলি খারাপ দিনগুলিকে ছাপিয়ে যাবে।
- এর মানেই কেরিয়ার শেষ হয়ে যাওয়া নয় (It is not a career-ender): আপনাদের মধ্যে অনেকেই চাকরি ছাড়া নিয়ে দুশ্চিন্তা করেন এবং ভাবেন যে আপনি এই অবস্থায় পৌঁছাতে যে পরিশ্রম করেছেন তা একেবারে শেষ হয়ে যাবে। তবে মনে রাখুন যে এই সমস্যা চিরস্থায়ী হবে না। আপনি শিশুর প্রিস্কুলে পৌঁছানোর বয়স অবধি বা কিন্ডারগার্ডেন পৌঁছানোর সময় অবধি বাড়িতে আপনার শিশুর সাথে থাকতে পারেন। পাশাপাশি যত বছরই আপনি স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হোন না কেন আপনার জ্ঞান ও শিক্ষাগত যোগ্যতা হারিয়ে যায় না। যখন আপনার প্রয়োজন মনে হবে আপনি আবার কাজে ফিরতে পারেন।
- এটি সন্তোষজনক ও খুশির (It is gratifying and rewarding): স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার সবচেয়ে ভালো কারণ হল এটি সবচেয়ে সন্তোষজনক। এটি আপনার মনকে খুশি করবে এই ভেবে যে আপনার শিশু সেই বিশেষ যত্ন পাচ্ছে যা কেবলমাত্র আপনিই দিতে পারবেন এবং তাদের বড় হতে দেখবেন। শিশুর যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আপনি বাড়ির কাজকর্মও করতে পারেন। অবশ্যই বাড়ির সমস্ত কাজ করা আপনার দায়িত্ব নয়; আপনার সঙ্গীকেও কিছু জিনিসে সাহায্য করতে হতে পারে। অবশেষে, স্বাস্থ্যকর পারিবারিক খাবার তৈরি করার জন্যে বেশি সময় পাওয়াও মনকে খুশি করে।
- আপনি ওদের প্রথম শিক্ষক (You are their first teacher): স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হতে খুশি হওয়ার আরেকটি ভালো কারণ হল আপনিই আপনার শিশুর প্রথম শিক্ষক হয়ে উঠতে পারেন। আপনি ওদের কেবল হাতে গোনা বা অক্ষরই যে শেখাবেন তা নয়, আপনি ওদের নীতিবোধ ও জীবনশৈলীও শেখাবেন।
- আপনি আপনার শিশুকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন (You can discipline your child): আপনার শিশুকে নিয়মানুবর্তীতা শেখানোর ক্ষেত্রে এক ভাবে লেগে থাকা আবশ্যক। আপনার শিশু শৃঙ্খলার মধ্যে থেকে সীমাবদ্ধতাগুলি বেছে নিতে শুরু করবে।
- কোনো ব্যস্ততাপূর্ণ সকাল নয় (No hectic mornings): আপনার সকালগুলি অপেক্ষাকৃত শান্ত হবে যা স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার আরেকটি কারণ। উদাহরণস্বরূপ, বহু মানুষ শিশুদের ডেকেয়ারে পাঠানোর জন্যে তৈরি করতে গিয়ে তাদের সকাল কতটা জটিল কাটে সেই বিষয়ে অভিযোগ করে থাকেন। স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হলে এই ধরনের কোনো সমস্যা থাকে না। তবে সব সকাল শান্ত নাও কাটতে পারে।
- আপনার শিশুর উন্নতির জন্যে সহজেই একটি রুটিন তৈরি করতে পারেন (Easy to create a routine that your child can prosper on): স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার আরেকটি দারুণ উপকারিতা হল আপনি আপনার শিশুর জন্যে যথার্থ দিনসূচী তৈরি করতে পারবেন। বিশেষ করে যখন তারা ছোট থাকে বহু শিশুই একটি নির্দিষ্ট রুটিনে উন্নতি করে। আপনার শিশুর সাথে বাড়িতে থাকলে আপনি সপ্তাহে বেশির ভাগ দিনই সেই রুটিন মেনে চলতে পারবেন।
- আপনার শিশু প্রতিদিন কী-কী দেখছে তা আপনি জানতে পারবেন (You know what your child is exposed to each day): বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে সবকিছুই শিশুদের তাড়াতাড়ি বড় করে তোলার চেষ্টা করছে। সামাজিক গণমাধ্যমগুলি যেভাবে শিশুদের নিত্য টার্গেট করে চলেছে তাতে করে আপনার শিশু কী দেখছে তা জানা জরুরি। যে শো বা ছবিগুলি তারা দেখে সেগুলি বয়সানুযায়ী সঠিক কিনা তাও আপনি সুনিশ্চিত করতে পারবেন। এছাড়াও আপনি সারাদিন জুড়ে ওদের সাথে নানা কার্যকলাপ করতে পারবেন।
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার অসুবিধাগুলি কী-কী?
যদি আপনি মনে করেন যে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়া সহজ তবে শুনুন তা নয় কারণ আপনাকে সারাদিন ধরে শিশুর অত্যাচারগুলি সহ্য করতে হবে। এছাড়া স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার কিছু অন্যান্য অসুবিধা নিম্নে দেওয়া হল:
- পরিচয় হারানোর অনুভুতি (A sense of loss of identity): মাঝে-মাঝে আপনার মনে হতে পারে যে শিশুর যত্ন নেওয়া ছাড়া আপনার আর কোনো কাজ নেই। এছাড়া পরিবারে আপনার অবদান অনেক ক্ষেত্রে চোখ এড়িয়ে যায় কারণ আপনার সঙ্গী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা মনে করতে পারেন যে বাড়িতে বসে আপনি আরাম করছেন।
- আপনার একা লাগতে পারে (You may feel isolated): শিশুর জন্মের পর প্রাথমিক দিনগুলিতে আপনার খুব খারাপ অনুভুতি হতে পারে। আপনার একা লাগতে পারে কারণ বাইরে বেরোনো, মানুষের সাথে কথা বলা বা আশে-পাশে কী হচ্ছে সেই বিষয়ে জানার জন্যে আপনার কাছে সময়ই থাকবে না।
- জীবন একঘেয়ে হয়ে যায় (Life becomes boring): মাঝে-মাঝে রুটিন একঘেয়ে হয়ে যায় এবং আপনার এও মনে হতে পারে যে জীবন যান্ত্রিক হয়ে উঠেছে। এছাড়া কিছু-কিছু সময়ে বাড়ির নিত্য কাজগুলিও একঘেয়ে লাগে।
- আপনি শারীরিকভাবে ক্লান্ত হতে পারেন (You are physically exhausted): আপনার একটি সাপোর্ট সিস্টেম থাকা সত্ত্বেও শিশুর যত্ন নেওয়া ক্লান্তিকর হতে পারে। এটি দিনের শেষে আপনাকে অবশ্রান্ত করে দিতে পারে। শারীরিক ও মানসিক ভাবে আপনার বিধ্বস্ত লাগতে পারে এবং আপনি কেবল ঘুমাতে চাইতে পারেন।
- নিজের জন্যে আপনার কোনো সময় থাকে না (You have no 'me-time'): সাধারণ বিশ্বাসের অন্যথা হল, স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টরা আসলেই নিজেদের জন্যে কোনো সময় পান না। যেহেতু আপনার দিনটি শিশু ও অন্যান্য ঘরোয়া কাজ দিয়ে শুরু হয় ও তাই দিয়েই শেষ হয়, আপনার এই ভূমিকায় দমবন্ধ লাগতে পারে, কারণ আপনার নিজের কোনো জায়গা থাকে না।
- হবির জন্যে কোনো সময় থাকে না (There is no time for hobbies): আপনার কেরিয়ার না থাকলেও একটি হবি তৈরি করা বা কিছু গঠনমূলক কাজ করা আপনার সময়ের অভাব তৈরি করে আপনাকে ক্লান্ত করতে পারে।
- আর্থিকভাবে আপনি আপনার সঙ্গীর ওপর নির্ভরশীল (You are financially dependent on your partner): স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়া আপনাকে সমস্ত খরচের জন্যে আপনার সঙ্গীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল করে তোলে। এছাড়াও আপনাকে একজনের রোজগারে সমস্ত খরচ সামাল দিতে হয়।
- আপনি আপনার কাজকে মিস করতে পারেন (You may miss your job): আগে কাজ করে থাকলে আপনার জীবনযাত্রার এই পরিবর্তন খুবই মন খারাপ করা হতে পারে। আপনি কাজে ফিরে যাওয়া, একটি পেচেক পাওয়া, এবং সহকর্মীদের সাথে কথা বলা মিস করতে পারেন।
- পিছিয়ে যাচ্ছেন (Missing work and learning time): আপনার এও মনে হতে পারে যে অন্যদের থেকে আপনি পিছিয়ে যাচ্ছেন এবং কাজ শুরু করার সময় আপনার কম জ্ঞান থাকবে।
- সঙ্গীর সাথে ঝগড়া হতে পারে (Can cause conflicts with your partner): যেহেতু আপনি সারাদিন কী করছেন সেই বিষয়ে আপনার সঙ্গীর কোনো ধারনাই নেই তাই এটি তাদের কাছে সহজ মনে হতে পারে। তবে সত্যিটা আলাদা, বোঝাপড়ার অভাবের ফলে ঝগড়া হয়ে থাকে।
- কোনো টাইম না থাকা (No downtime): যেহেতু এটি একটি কাজ তাই আপনার কোনো ব্রেক, ঘুরতে যাওয়া বা ছুটি থাকে না। এছাড়াও আপনার দেরি করে ঘুমানো, দেরি করে ওঠা বা সিনেমা দেখতে বা রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার মতো উপায়
থাকে না।
সফল স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়ার টিপ্স
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হয়ে টাকা সাশ্রয় করবেন কীভাবে?
যদি আপনি আপনার আর্থিক অবস্থাকে অবহেলা না করে স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হতে চান তবে তার জন্যে এখানে কিছু টিপ্স দেওয়া হল:
- টাকা-পয়সার ব্যবস্থাপনা ভালো করে করুন
- আপনি ট্যাক্স ও ট্যারিফে সাশ্রয় করতে পারেন
- আপনার ডেকেয়ারের খরচা বাঁচাতে পারেন
- ডায়পার ও ফর্মুলা ফিডের খরচ কমাতে পারেন
- বাড়িতে ফ্রেশ খাবার তৈরি করতে পারেন
- যাতায়াত ও তেলের খরচ কমানো যেতে পারে
- একটি পার্ট-টাইম কাজ বা সেলফ্ এমপ্লয়েমেন্ট খুঁজুন
স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টদের জন্যে কোনো কাজ আছে কি?
ভাগ্যবশত বিভিন্ন ফ্রিল্যান্স ও পার্ট-টাইম কাজগুলি ঘরে বসে করা যায় তাই নতুন কাজ খোঁজার জন্যে ও আপনার বাড়িতে বসে আরামে তা করার জন্যে অনেক সুযোগ রয়েছে। আপনি কেরিয়ার সাইটগুলিতে কী কাজ আছে ও আপনার স্কিল সেট, অভিজ্ঞতা ও উপযুক্ত সময় অনুযায়ী কোন কাজ সঠিক তা দেখার জন্যে পার্ট-টাইম কাজ খুঁজতে পারেন। কিছু সম্ভাব্য স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টদের কাজ হল অনলাইনে পড়ানো, এডিটিং ও কন্টেন্ট রাইটিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইন করা, বুককিপিং ও অ্যাকাউন্টিং।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে রিমোট ও পার্ট-টাইম কাজগুলি আপনার সময়ের সাথে খাপ খেয়ে যায় যা একজন স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্টের জন্যে সুবিধাজনক। তবে একটি পরিকল্পনা করার জন্যে সময় নেওয়া ও এমন কাজের চাপ নেওয়া যা আপনাকে ক্লান্ত না করে নিজের এবং আপনার শিশুর যত্ন নিতে সাহায্য করে তা বেছে নেওয়া সুনিশ্চিত করুন। তবে যদি আপনি এমন একটি পার্ট-টাইম কাজ নিতে চান যে কাজ আপনি করতে চান তবে আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলুন এবং আপনার পরিবার ও বন্ধুদের থেকে সাহায্য চান যাতে আপনি সহায়তা পান।
উপসংহার
একজন স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হতে গেলে প্রচুর কঠোর পরিশ্রম প্রয়োজন, প্রায়ই যা একটি ফুল-টাইম কাজের থেকে বেশি হয়ে থাকে। এই ভূমিকাটি যেহেতু মাঝে-মাঝে নিঃস্বার্থ অনুভব করায়, তাই নিজেকে মূল্য দেওাও আবশ্যক যাতে আপনার বিরক্তি না আসে। একজন স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট বাড়িতে নিজের পরিবারের খেয়াল রাখতেও পছন্দ করেন, এবং এটি একটি ফুল-টাইম দায়িত্ব, যার কোনো নির্দিষ্ট সময়, ছুটি বা অবসর নেই। তাই স্টে-অ্যাট-হোম পেরেন্ট হওয়া বেছে নেওয়ার আগে এর সুবিধা ও অসুবিধাগুলি ভালো করে ভেবে নেওয়া প্রয়োজন।